যে ৫ কারণে সবার আগে বিদায় দিল্লির

পয়েন্ট তালিকার তলানিই যেন ঠিকানা দিল্লি ক্যাপিটালসের। এবারের আইপিএলে ধুঁকতে থাকা দিল্লি বেশির ভাগ সময়েই ছিল তালিকার তলানিতে। টুর্নামেন্টে নিজেদের প্রথম পাঁচ ম্যাচে হারা দিল্লির প্লে-অফের আশা তখন থেকেই নিবু নিবু করছিল।

পরের ছয় ম্যাচে ৪ জয় পেলেও গতকাল পাঞ্জাবের কাছে হেরে সেই সম্ভাবনা একেবারেই শেষ হয়ে গেছে। এবারের আসরে প্রথম দল হিসেবে দিল্লি টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে গেছে। এখন পর্যন্ত ১২ ম্যাচ খেলে দিল্লির জয় মাত্র ৪ ম্যাচে।

আইপিএলের সর্বশেষ চার মৌসুমের তিনটিতেই প্লে-অফ খেলা দিল্লির এবার এমন হাল কেন?

বেশির ভাগ দলের ওপেনাররা যেখানে উড়ন্ত শুরু এনে দিচ্ছে, সেখানে ধারাবাহিকভাবে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে গেছে দিল্লির টপ অর্ডার। অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নারের সঙ্গে পৃথ্বী শ ও ফিল সল্ট—কারও জুটিই জমে ওঠেনি। ফিল সল্ট শেষ দিকে কয়েকটি ভালো ইনিংস খেললেও দিল্লি ততক্ষণে চলে গেছে খাদের কিনারায়।

টপ অর্ডারের আরেক ব্যাটসম্যান মিচেল মার্শও প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেননি। এ অস্ট্রেলিয়ান অলরাউন্ডার ৯ ইনিংসে রান করেছেন মাত্র ১৪ গড়ে। উড়ন্ত শুরু দূরে থাক, বেশির ভাগ ম্যাচেই পাওয়ার প্লেতে একাধিক উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়েছে দিল্লি। ওয়ার্নারের স্ট্রাইক রেট নিয়েও প্রশ্ন ছিল। হয়তো যোগ্য সঙ্গী না পাওয়ায় দলকে টেনে তোলার দায়িত্ব নিতে হচ্ছে তাঁকে। সেটা করতে গিয়ে কিছুটা রয়ে–সয়ে খেলতে হচ্ছে।

ভারতীয় মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতা

মনিশ পাণ্ডে, আমান খান, সরফরাজ খানদের কেউই জ্বলে উঠতে পারেননি। আইপিএলের যেকোনো সফল দলের উদাহরণ টানলেই দেখা যাবে সেই দলের ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের অবদান। তবে দিল্লিতে সেটা অনুপস্থিত। মিডল অর্ডারে ব্যাট করা মনিশ পাণ্ডে ৯ ইনিংসে ১৭.৭৭ গড়ে রান করেছেন ১৬০। এ ছাড়া বিদেশি মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান রাইলি রুশোও ঘুরপাক খাচ্ছেন ব্যর্থতার বৃত্তে।

পেসারদের ছন্দহীনতা

এবারের আসরে এখন পর্যন্ত দিল্লির হয়ে সর্বোচ্চ উইকেট নিয়েছেন অলরাউন্ডার মিচেল মার্শ (১২টি)। এ তালিকায় পরের দুটি নাম অক্ষর প্যাটেল (১০) ও কুলদীপ যাদব (১০)। নতুন বলে বল করা আনরিখ নর্কিয়া, খলিল আহমেদ, মুকেশ কুমাররা বেশির ভাগ ম্যাচেই ব্যর্থ। দুই ম্যাচে সুযোগ পেয়েও ভালো করতে পারেননি বাংলাদেশের পেসার মোস্তাফিজুর রহমান। শেষ দিকে নতুন বলে ইশান্ত শর্মা ভালো করলেও ততক্ষণে দিল্লির প্লে-অফে খেলার আশা অনেকটাই ক্ষীণ হয়ে গেছে।

সেরা একাদশ বাছাইয়ে সমন্বয়হীনতা

তারকাসমৃদ্ধ দল ও প্রতিটি বিভাগে পরীক্ষিত ক্রিকেটারদের রেখেও জিততে পারেনি দিল্লি। টুর্নামেন্টের প্রথম দিকে সুযোগ না পাওয়া ফিল সল্ট, ইশান্ত শর্মারাই পরবর্তী সময়ে ভালো করেছেন। ছন্দে না থাকা পৃথ্বী শকে টানা ম্যাচ খেলানো নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। প্রথম পাঁচ ম্যাচ হারার পর বীরেন্দর শেবাগ দায় দিয়েছিলেন কোচিং স্টাফকে। রিকি পন্টিং, সৌরভ গাঙ্গুলী, শেন ওয়াটসনরা সেরা একাদশ বাছাই করতে পারছে না বলে মন্তব্য করেছিলেন তিনি।

নিয়মিত অধিনায়ক পন্তের অনুপস্থিতি

২০২১ সাল থেকে দিল্লি ক্যাপিটালসের অধিনায়কত্ব করে আসছিলেন ঋষভ পন্ত। এবারও তাঁর নেতৃত্বেই দলটির খেলার কথা ছিল। কিন্তু গত বছরের ডিসেম্বরে ভয়াবহ গাড়ি দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন পন্ত। পুরোপুরি সেরে না ওঠায় খেলতে পারছেন না এই উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান।

যদিও দলকে অনুপ্রাণিত করতে একাধিক ম্যাচ মাঠে বসে দেখেছেন। দিল্লিও তাঁকে দ্বাদশ খেলোয়াড়ের স্বীকৃতি দিয়ে একটি ম্যাচে ডাগআউটে জার্সি টানিয়ে রেখেছিল। কিন্তু ২২ গজে তাঁর অনুপস্থিতি দলকে বেশ ভোগাচ্ছে। বিশেষ করে মিডল অর্ডার ব্যাটিংয়ে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *